সেলফির প্রত্তুত্তর দিলেন নেত্রীরা

প্রকাশঃ অক্টোবর ৬, ২০১৬ সময়ঃ ৮:০৮ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ৮:০৮ অপরাহ্ণ

download-1সিলেটের ছাত্রলীগ নেতার চাপাতির কোপে আহত কলেজছাত্রী খাদিজা আক্তার নার্গিসকে দেখতে গিয়ে সেলফি তুলেছিলেন আওয়ামী লীগের তিন নেত্রী। রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) তোলা সেই সেলফি নিয়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে ফেসবুকে। পরে ফেসবুকে দেওয়া স্ট্যাটাসেই বিষয়টির ব্যাখ্যা দিয়েছেন তারা।

গতকাল বুধবার আইসিইউতে গাউন গায়ে সেলফি তোলা আওয়ামী লীগের তিন নেত্রী হলেন সংসদ সদস্য সাবিনা আক্তার তুহিন, সাবেক সংসদ সদস্য ও যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক অপু উকিল এবং যুব মহিলা লীগের যুগ্ম সম্পাদক কোহেলী কুদ্দুস।

ঐ সেলফি নিয়ে সমালোচনার পরিপ্রেক্ষিতে ফেসবুকে নিজেদের পক্ষে ব্যাখ্যা দিয়েছেন এই নেত্রীরা। ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন কোহেলী কুদ্দুস। খাদিজার বর্তমান অবস্থার তথ্য সবাইকে জানানোর অংশ হিসেবে ছবিটি যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করা হয়েছিল বলেও জানান তিনি। যুব মহিলা লীগের এই নেত্রীর দাবি, ছবিটি দেখে অনেকেই ভুল বার্তা পেয়েছেন।

নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে এক পোস্টে কোহেলী লিখেছেন, ‘অপু দিদি, তুহিনসহ আমার একটি ছবি সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। আসলে খাদিজাকে দেখতে যেয়ে তার অবস্থার কিছু তথ্য সবাইকে জানানোর অংশ হিসেবে যোগাযোগমাধ্যমে ছবিটি পোস্ট করা হয়েছিল। তবে ছবিটা দেখে অনেকেই ভুল বার্তা পেয়েছেন। অনেকে ছবিটি দেখে মর্মাহত হয়েছে…আমি খুবই দুঃখিত!’

‘সবাই বিষয়টা ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন; দয়া করে ভুল ব্যাখ্যা দেবেন না। আমাদের উদ্দেশ্য আসলে সে রকম কিছু ছিল না। আমরা চেষ্টা করেছিলাম মানুষকে তার সর্বশেষ অবস্থা সম্পর্কে জানানোর।’

‘কারণ খাদিজাকে নিয়ে নানা জায়গা থেকে গুজব ছড়াতে থাকে, খাদিজা মারা গেছেন এই বলে। কিন্তু মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে অসীম করুণাময়ের কৃপায় বোনটি এখনো আমাদের আশার আলো দেখিয়ে বেঁচে আছে। সৃষ্টিকর্তা বোনটিকে সুস্থ করে তার পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দিক, এটাই একমাত্র প্রার্থনা। আমরা মানবতার পক্ষে আর দোষী সন্ত্রাসীদের বিপক্ষে। জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু।’

এদিকে, এসব সমালোচনার মধ্যেই সংসদ সদস্য সাবিনা আক্তার তুহিন নিজের ওয়াল থেকে সরিয়ে নেন আলোচিত-সমালোচিত সেই সেলফি। গতকাল দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার কিছু পর তিনি ১১টি ছবি ফেসবুক অ্যাকাউন্টে যুক্ত করেছেন, যেগুলো বিভিন্ন সময় পুলিশের সঙ্গে আওয়ামী লীগের নারী কর্মীদের সংঘর্ষ কিংবা নির্যাতনের।

ছবিগুলোর জন্য সংসদ সদস্য তুহিন একটি দীর্ঘ ক্যাপশন ব্যবহার করেছেন। তিনি আইসিইউতে তোলা ছবিটিকে ‘সেলফি’ হিসেবে অস্বীকার করে লিখেছেন, ‘যখন বিএনপি-জামায়াতের অত্যাচারের এই ছবিগুলো দিই, তখন শেয়ার হয় না ইমরান এইচ সরকারদের কাছে। আমরা আওয়ামী লীগের নারী কোনো প্রতিবাদ হয় নাই কখনো। আমরা ভুক্তভোগী, তাই নারীর কষ্ট বুঝি, তাই পাশে গিয়েছি। ছবিটি যদিও সেলফি না, ছোট ভাই শাহাদাতের তোলা। মনে হচ্ছে, কতগুলো খুন করেছে, আর যে খাদিজাকে না বাঁচিয়ে ভিডিও করল এ ব্যাপারে সবাই নিশ্চুপ। বেগম জিয়া সারা বছর গোলাপি লিপস্টিক দেয়, এটা চোখে পড়ে না। উনি তারপরও খাঁটি মুসলিম। আমরা ভদ্র ড্রেস পরে গেছি, তারপরও কত কথা।’

গত সোমবার ডিগ্রি (পাস কোর্স) দ্বিতীয় বর্ষের পরীক্ষা দিতে এমসি কলেজ ক্যাম্পাসে গিয়েছিলেন সিলেট সরকারি মহিলা কলেজের শিক্ষার্থী খাদিজা। বিকেলে পরীক্ষা দিয়ে বেরিয়ে আসার সময় ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাঁকে কুপিয়ে গুরুতর আহত করেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (শাবি) শাখা ছাত্রলীগের সহসম্পাদক বদরুল আলম (২৭)। পরে অন্য শিক্ষার্থীরা তাকে পিটুনি দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করেন।

প্রতিক্ষণ/এডি/শাআ

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য

20G